ডেস্ক নিউজ।।
ঢাকা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
অগ্নি দগ্ধ আরও ২০ জন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় মসজিদে গ্যাসের লিকেজ মেরামত করে দেয়নি বলে তিতাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির অভিযোগ, ৯ মাস আগেই গ্যাসলাইনের লিকেজ মেরামতের জন্য লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তারা। তখন এ কাজের জন্য মোটা অংকের টাকা চেয়েছিল তিতাসের কর্মকর্তারা। এ টাকা না দেয়ায় লিকেজ মেরামত করে দেয়নি তিতাস।
এবিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুর মেম্বারও বলেন, নামাজ পড়তে এলে মুসল্লিরা গ্যাসের গন্ধ পেতেন। তারপর গ্যাসলাইন লিকেজ হওয়ার বিষয়টি টের পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা মেরামত করার জন্য তিতাসকে জানিয়েছিলাম। তখন তারা যে অর্থ দাবি করে তা জোগাড় করতে পারিনি আমরা। টাকা দিতে না পারায় তিতাস আর এই কাজটি করে দেয়নি।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সদস্য জনাব, দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদেরকে বলেন, পাইপ মেরামত করতে কমিটির পক্ষ থেকে আমরা তিতাস কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েছি। কিন্তু তারা টাকা দাবি করলে এ বিষয়ে আর গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
তাই একই অভিযোগ অনেক মুসল্লির। হারুন মিয়া নামে স্থানীয় এক মুসল্লি সংবাদ মাধ্যমে কে বলেন, আমরা উনাদের (তিতাস) একাধিক বার বলেছি। তারপরও উনারা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তবে মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিদের এমন অভিযোগের জানতে তিতাসের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী জনাব, মুকবুল আহম্মদকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোনটব রিসিভ করেননি।
তবে এ বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত গ্যাসের লাইনের লিকেজের কারণেই এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেঠে বলে ধরণা করছেন ফায়ার সার্ভিসের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সাজ্জাদ হোসাইন।
তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর গণমাধ্যমকে বলেছেন যে, মসজিদের ফ্লোরের নিচ দিয়ে একটি গ্যাসের লাইন গেছে। সেই লাইন থেকে গ্যাস লিক হয়ে বদ্ধ মসজিদের ভেতরে জমা হয়। এসি থাকায় পুরো মসজিদ বন্ধ ছিল। লিক হওয়া গ্যাস বের হতে পারেনি। তাছাড়া এসিতেও গ্যাস থাকে। সুইচ অন বা অফ করার সময় কোথাও বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হয়েছে। গ্যাস উপরের দিকে থাকায় এসিগুলো বিস্ফোরিত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ ৬ই সেপ্টেম্বর রোজ শনিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে গ্যাস লিকেজ ও মুসল্লিদের অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় তিতাসের এমডি আলী মোঃ আল মামুনকে।
জনাব, আকবর সাংবাদিকদের বলেন, মসজিদে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় তিতাসের কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মুসল্লিদের অভিযোগও আমলে নেয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দোষী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার নামাজের সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ৫০ জনের অধিক মুসল্লি দগ্ধ হন।
তবে দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৭ জনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এই বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে। জানালার কাচ উড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
Leave a Reply