1. mumin.2780@gmail.com : admin : Muminul Islam
  2. Amenulislam41@gmail.com : Amenul :
  3. smking63568@gmail.com : S.M Alamgir Hossain : S.M Alamgir Hossain
অতিথি পাখির আগমনে বাইক্কা বিল মুখরিত - আলোরদেশ২৪

অতিথি পাখির আগমনে বাইক্কা বিল মুখরিত

  • প্রকাশিত : সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২১
  • ৭১৯ বার দেখা হয়েছে

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি।।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থতি বাইক্কা বিল হাইল হাওরের প্রাণ। বিলে গড়ে তোলা হয়েছে পাখি ও মাছের অভয়াশ্রম। এক সময় শুধু শীত কালে এখানে অতিথি পাখি আসতো কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে বাইক্কা বিল পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রমে পরিনত হয়েছে।

বার (১২) মাসই বিলে পাখি দেখা য়ায়। শুধু পাখি নয় এখানে রয়েছে বড় বড় দেশীয় প্রজাতির মাছ তাও সম্ভব হয়েছে এখানে মাছের স্থায়ী আভয়াশ্রম গড়ে তোলায়। সেখানে পাখি দেখার জন্য নির্মিত হয়েছে একটি র্পযটন টাওয়ার। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের একমাত্র পর্যটন টাওয়ার। এ টাওয়ারটি নির্মান করা হয়েছে শুধু মাত্র পাখি দেখার জন্য। টাওয়ারটি ৩তলা বিশিষ্ট। প্রত্যেক তলাতেই রয়েছে ১টি করে শক্তিশালী বাইনোকোলার।

শীতের আগমনের শুরু থেকেই বাইক্কা বিলের অভয়াশ্রমে অতিথি পাখিসহ দেশিয় পাখিরা এসে জড়ো হচ্ছে। পুরো শীতটাই এখানে কাটিয়ে এক সময় নিজ নিজ গন্তব্যে পাড়ি জমাবে পাখিরা। এরা দল বেঁধে আসে আবার দল বেঁধেই চলে যায়। চলতি বছর কার্তিকের শেষভাগ থেকেই এই অগ্রহায়নে বিলটি ভরে গেছে অতিথি পাখিদের পদচারণায়।
একটু উষ্ণতার খোঁজে প্রতি বছরই ঝাঁকে ঝাঁকে আসে অতিথি পাখি। শীতের কুয়াশার চাদরের ভেতর হাজারো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত আর পানিতে ঝাপনোর দৃশ্যে এখন পূরো বাইক্কা বিল মুখরিত। বিচিত্র রং আর নানা রকম প্রজাতির অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে প্রতি বছর।

ফ্রেন্ডস অব বাইক্কা বিলের আহবায়ক ও ওয়ার্ল্ডফিস ডিভিশনাল এডমিনিস্ট্রেটর মাজহারুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান যে, সুদূর সাইবেরিয়া, হিমালয় অঞ্চলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে শীতের শুরুতে প্রতি বছর ঝাঁকে ঝাঁকে আসে নানা প্রজাতির পাখিরা।
তিনি জানান, ঐসব অঞ্চলে যখন শীত তীব্র হয়ে ওঠে ঠিক সে সময় এসব পাখি একটু উষ্ণতা ও খাদ্যের অন্বেষণে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়ে দলবেঁধে এবং এসব পাখি তখন অস্তিত্বের প্রয়োজনে এ দেশের আতিথ্য নিতে ছুটে আসে বিভিন্ন হাওর, বিল ও জলাশয়ে। এবার বাইক্কা বিলে আসা অতিথি পাখির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রাজসরালী, পিনটেল, লেঞ্জা হাঁস, সাদা বক, দলপিপি, পানমুরগি, কাস্তেচড়া, বেগুনী কালেম, বালি হাঁস, ভুতি হাঁস, পাতি সরালী, পান কৌড়িসহ আরো অনেক প্রজাতির পাখি আছে।
তিনি আরোও জানান যে, বিগত কয়েক বছর ধরে মাচ্ প্রকল্প, আইপ্যাক ও ক্রেল প্রজেক্টের নজরদারির ফলে এবং শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের বাইক্কা বিলে বনায়ন ও জলজ উদ্ভিদ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়ায় এখানে অতিথি পাখির আগমন বেড়েছে। ইউএসএআইডি এর তত্ত্বাবধান ও অর্থায়নে এবং সিএনআরএস বাস্তবায়নে সরকারি সংরক্ষিত বাইক্কা বিল মৎস্য অভয়াশ্রমে জীববৈচিত্র্য রক্ষার কাজ শুরু করার পর এখানকার দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। নিরুপদ্রব বাইক্কা বিল এখন অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। ফলে আগের চেয়ে আরো বিচিত্র পাখির ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসছে।

হাইল হাওরের বড় গাঙিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা সংগঠনের সভাপতি মোঃ আব্দুস সোবহান চৌধুরী জানান যে, ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বাইক্কা বিলে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। যা জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। শীত শেষে মার্চে যখন গ্রীষ্মের শুরু তখন এসব পাখি আবার ফিরে যাবে আপন নীড়ে।
বাইক্কা বিল সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, এ বিলের সৌন্দর্য বেড়েছে অপরূপ রুপে। নিরাপদ আশ্রয়ে এসব অতিথি পাখি নির্ভাবনায় মেতে উঠেছে জলকেলি আর ডুব সাঁতারে। কখনো তারা ঝাঁকে ঝাঁকে চক্রাকারে উড়ে বেড়াচ্ছে বিলের আকাশ জুড়ে। কেউবা জলের মধ্যে খাবার জোগারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। আগত এসব পাখির কলকাকলি আর কিচিরমিচির শব্দে হাওরে এক মধূময় আবহ বিরাজ করছে। এসব দৃশ্য সহজেই মন কাড়ে আগত দেশি-বিদেশি পাখি প্রেমীদের। এদের অবিরাম খুনসুটি, ডানা ঝাপটে দলবেঁধে উড়ে চলা আর ডুব সাঁতার দেখতে দেখতে কখন যে সন্ধ্যা নামে আগত পাখিপ্রেমীরা তা বুঝতেই পারেন না।

বিশেষ সুত্রে জানতে পারলাম যে, হাওরের পাড়ে দীর্ঘ হিজল-করচের সবুজ বনায়ন, বিলগুলোতে শাপলা ও শালুকসহ পর্যাপ্ত খাবার থাকায় এই বিলে অতিথি পাখির আগমন এবার উল্লেখযোগ্য।
এবিষয়ে মাজহারুল ইসলাম আরোও জানান যে, অতিথি পাখিরা আমাদের পরিবেশের উপর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। পাখির বিষ্টা জলাভূমির উর্বরতা বৃদ্ধিসহ মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া পাখিরা কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলের ক্ষতি রোধ করতে সহায়তা করে। পাখির বিষ্টার কারণে দ্রুত বেড়ে ওঠে জলজ উদ্ভিদ, যা খেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পায় তৃণভোজি মাছ। এছাড়াও পাখিদের একটি বৃহৎ অংশ জলজ আগাছার অতিবৃদ্ধি রোধ করে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিথি পাখিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এই শীতে অতিথিদের দেখতে বাইক্কা বিলে প্রতিদিন আসছে দেশি ও বিদেশি পর্যটক। পাখিদের জলকেলি আর নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে এখানে রয়েছে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। টাওয়ারে বসে বাইনোকুলার ও টেলিস্কোপ দিয়ে বাইক্কা বিলের বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন করা যায়। এসব দৃশ্য দেখে বিমোহিত হন আগত হাজার হাজার দর্শনার্থীরা।
মোঃ আব্দুস সোবহান চৌধুরী আরোও জানান যে, সম্প্রতি বাইক্কা বিলে যাবার ভাঙাচুড়া রাস্তাটি পাকা হয়ে যাওয়ায় পর্যটক, দর্শনার্থীদের আগমন বাড়ছে। বাইক্কা বিলের অপার সৌন্দর্য, জলজ সম্পদ আর অতিথি পাখির জলকেলী, উড়াউড়ি ও কিচির মিচিতে মুখরিত অপরুপ এই বাইক্কা বিল। বিলের সৌন্দর্য দেখতে এবার দর্শনার্থীদের উল্লেখযোগ্যহারে সমাগম ঘটবে বলে মনে করছেন তিনি।

শেয়ার..

আরো সংবাদ পড়ুন...
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | আলোর দেশ ২৪ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Developed By Radwan Ahmed