শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি::
ইসরায়েলের এক হামলায় ৫ হাজার ভ্রূণ হত্যা
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের পুর্বাশা এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়াটে সুইটি আক্তার। তার ছয় বছরের একটি ছেলে। সুইটি আক্তারের বয়স যখন ছয় বছর ছিল তখনই তিনি বাবার সঙ্গে পুকুরে নেমে সাঁতার শিখেছেন। নিজে সাঁতার জানলেও সাঁতার শেখানোর উপযোগী পুকুর না পাওয়ায় ছেলেকে সাঁতার শেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি।
এ অবস্থা শুধু সুইটি আক্তারেরই নয়; পুকুর, জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়া ও নোংরা আবর্জনায় পুকুরের পানি অপরিষ্কার থাকায় শ্রীমঙ্গলে শিশুদের সাঁতার শিখাতে পারছে না অভিভাবকরা। শিশুকালে সাঁতার না শেখার কারণে বড় হয়ে আর সাঁতার শিখতে পারছে শিশুরা। সুইটি আক্তার বলেন, ‘শিশুদের সাঁতার শেখানো অতন্ত জরুরি। শহরের পুকুরগুলো এত নোংরা যে সেখানে পা ধুতেই ঘেন্না লাগে। সেখানে কীভাবে আমার ছেলেকে সাঁতার শেখাব; কিন্তু আমার শিশুকে সাঁতার শিখাতে চাই, সুইমিংপুলগুলোতে সাঁতার শেখানোর জন্য অনেক টাকা খরচ করতে হয়। অন্য শিশুরাও যেন সাঁতার শিখতে পারে সেটা চাই।’
সরেজমিন শ্রীমঙ্গল ঘুরে দেখা গেছে, ১০ বছর আগেও যেখানে পুকুর ছিল সেগুলোর অনেকটাই মাটিতে ভরাট হয়ে গেছে।
এ ছাড়াও শহরের ডাকবাংলা পুকুর, সাগরদিঘি পুকুর সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও ময়লা-আবর্জনায় এই পুকুরগুলোর পানি খুবই নোংরা। ময়লা পলিথিন পুকুরের চারপাশে ভেসে থাকে। এই নোংরা পানিতেই শ্রমজীবী অনেক মানুষ গোসল করে। তবে উপজেলা প্রশাসনের একটি বড় পুকুর রয়েছে। সেখানে সাধারণ মানুষ তেমন একটা যান না। শ্রীমঙ্গলের দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজের প্রভাষক ও নাগরদোলা থিয়েটারের সভাপতি অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত বলেন, ‘আমাদের ছোট বেলায় আমাদের আশপাশে অনেক পুকুর ছিল, দিঘি ছিল।
এসবের বেশিরভাগই এখন ভরাট হয়ে গেছে।
যেগুলো এখনো আছে সেগুলো নোংরা-আবর্জনায় ভরা, পানি অপরিষ্কার। এসব পানিতে শিখতে গেলে উলটো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হবে। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে এসব পুকুরের পানি পরিষ্কার করে শিশুদের সাঁতার শেখার ব্যবস্থা করার। প্রতি বছর সাঁতার না জানার কারণে অনেক শিশুই ডুবে মারা যায়। ছোট বেলায়ই যদি শিশুরা সাঁতার শিখে ফেলে তাহলে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমবে।
এবিষয়ে কবি ও লেখক সজল দাশ বলেন যে, সাঁতার তো একটা খেলা। আমরা খেলার ছলেই সাঁতার শিখেছি। এখন শিশুরা সাঁতার শেখার জায়গা পায় না। আমার ছেলেকে সুইমিংপুলে নিয়ে গিয়ে সাঁতার শিখিয়েছি। সুইমিং পুলে সাঁতার শেখা ব্যয় বহুল পাশাপাশি সাঁতার শেখার জন্য উপযুক্ত নয়। সরকার যদি প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় সাঁতার শেখার একটা অধ্যায় রাখে এবং উপজেলা পর্যায়ে শিশুদের সাঁতার শেখার জন্য সরকারিভাবে পুকুর তৈরি করে সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখে তাহলে সবার জন্য ভালো হবে।’
এবিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন যে, আমরাও বিভিন্ন সময়ে অভিভাবক সমাবেশে শিশুদের সাঁতার শেখানোর কথা বলি। শিশুরা সাঁতার শিখে রাখলে ভালো। আমাদের উপজেলা প্রশাসনের একটি পুকুর রয়েছে এখানে চাইলে শিশুরা সাঁতার শিখতে পারে। পাশাপাশি আমি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে বলে দেব, যেন উপজেলার সরকারি পুকুরগুলোর পানি পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা রাখেন।