আলোরদেশ২৪ নিউজ ডেস্ক।। ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের টিকার প্রথম চালানের ৫০ লাখ টিকা ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। চার-পাঁচ দিনের মধ্যে টিকাগুলো পৌঁছে দেয়া হবে দেশের প্রতিটি বিভাগে। জানা গেছে, প্রথম চালানের টিকার মধ্যে সিলেট বিভাগে পাঠানো হবে প্রায় ৪৫ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন।
এই বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিপ্তরের সহকারি পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, সিলেট বিভাগের জন্য ৩৭ কার্টুন ভ্যাকসিন আসবে। যার প্রতি কার্টুনে থাকবে ১২০০ ডোজ ভ্যাকসিন।
সিলেট বিভাগের জন্য আসা ৩৭ কার্টুন ভ্যাকসিনের মধ্যে মৌলভীবাজারে ৫ কার্টুন, হবিগঞ্জে ৬ কার্টুন ও ৭ কার্টুন পাঠানো হবে সুনামগঞ্জে। অবশিষ্ট কার্টুনগুলো সিলেট জেলার জন্য থাকবে বলে জানান ডা. আনিসুর রহমান।
সিলেট জেলায় করোনার ভ্যাকসিন প্রথমে নিবেন শহীদ ডা.শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
প্রথম ধাপে মৌলভীবাজারে প্রায় ২৯ হাজার ফ্রন্ট লাইনার পাবেন করোনা টিকা। টিকা প্রদান,সংরক্ষণসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সব ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে টিকাদান শুরু হবে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫টি মানদণ্ডে প্রথম ধাপে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কাছ থেকে প্রায় ২৯ হাজার টিকার চাহিদা পাওয়া গেছে। এখন সবার প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র সংগ্রহের কাজ চলছে। সব ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে টিকাদান শুরু হতে পারে।
টিকাদান কর্মসূচিকে সামনে রেখে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালসহ সাত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রস্ততি নিচ্ছে। সঠিকভাবে কর্মসূচি সমন্বয় ও বাস্তবায়নের জন্য মৌলভীবাজার সিভিল সার্জনকে সভাপতি করে গঠন করা হয়েছে ছয় সদস্য বিশিষ্ট‘করোনা টিকা গ্রহণ কমিটি’।
কমিটির সভাপতি জানান, বর্তমানে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ চলছে। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে আটটি বুথে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে দুটি করে বুথে টিকাদান করা হবে। প্রতিটি বুথে দুজন স্বাস্থ্যকর্মী ও চারজন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন।এর মধ্যে মেডিকেল অফিসার, নার্স, মিডওয়াইফ এবং পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকাগণ থাকবেন। জেলা সদর হাসপাতালের আটটি বুথে ১৬ জন টিকা দানকারী ও ৩২জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন।
ভ্যাকসিন সংরক্ষণের বিষয়ে সভাপতি জানান,উপজেলা বাদে শুধু জেলা হাসপাতালে প্রায় ১৫ হাজার ভায়েল আছে।প্রতিটি ভায়েলে ১০টি করে এক সাথে দেড় লাখ ডোজ টিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
সিভিল সার্জন(ভারপ্রাপ্ত)ডা. বিনেন্দু ভৌমিক জানিয়েছেন,‘প্রথম ধাপে টিকা দেয়া হবে ডাক্তার,নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, বিজিবি, সংবাদকর্মী, আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনী, ব্যাংক বীমা প্রশাসনের মাঠকর্মীসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সম্মুখযোদ্ধারা। ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে মৌলভীবাজারের একদল ডাক্তার প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। তাদের মাধ্যমে চলতি মাসেই শেষ হবে টিকাদানের সকল প্রশিক্ষণ।এ বিষয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, টিকা সংরক্ষণের জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখানে সব ধরণের টিকা রাখা হয়।
উল্লেখ্য,২৫ জানুয়ারি এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে করে সিরাম ইনস্টিটিউটের ৫০ লাখ টিকা ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। টিকাগুলো গ্রহণ করেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন।
এ সময় সাংবাদিকদের পাপন জানান, প্রতিটি ভ্যাকসিনের স্যাম্পল আমরা ওষুধ প্রশাসনের ল্যাবরেটরিতে পাঠাবো টেস্ট করার জন্য। তারা ছাড়পত্র দিলে দেশের প্রতিটি জেলায় ভ্যাকসিন পৌঁছে দেবো।