কমলগঞ্জ মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।। মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে চামপারা চাবাগানে খুনের আসামীকে আজ বুধবার ভোর ৫টায় হবিগঞ্জের নোয়াপাড়া চা-বাগানে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বাগানে আম পাড়া নিয়ে সৃষ্ট বিরোধে দুই ছেলেকে সাথে নিয়ে তার ভাতিজা সুমন গোয়ালকে (৩২) কুপিয়ে খুন করেছেন আপন চাচা। এর আগে মঙ্গলবার ২৭শে এপ্রিল সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে উপজেলার ইসলামপুর ইউপির চাম্পারায় চা-বাগানের ২৫ নম্বর সেকশনে ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনায় দিন রাতেই নিহতের ভাই সঞ্জু গোয়ালা বাদি হয়ে চাচা মনোহর গোয়ালাকে প্রধান আসামি করে চাচাত দুই ভাই বিশ্বজিৎ গোয়ালা ও সঞ্জিত গোয়ালার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের ৫ ঘণ্টার মধ্যেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার ২৮শে এপ্রিল ভোর ৫টায় হবিগঞ্জের নোয়াপাড়া চা-বাগানে হত্যাকারীদের আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই চাচাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার প্রধান আসামি চাচা মনোহর গোয়ালা পলাতক রয়েছে।
এবিষয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, গতকাল মঙ্গলবার একটি গাছের আম পাড়া নিয়ে চাম্পারায় চা-বাগানের সুমন গোয়ালার সাথে তার চাচা মনোহর গোয়ালা ও তার দুই ছেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় সুমন গোয়ালা চা-বাগান অফিসে গিয়ে ব্যবস্থাপকের কাছে বিচারপ্রার্থী হন। এতে সম্মানহানি হয়েছে মনে করে ক্ষিপ্ত হয়ে মনোহর গোয়ালা তার দুই ছেলে বিশ্বজিত গোয়ালা ও সঞ্চিত গোয়ালা নিয়ে সুমন গোয়ালাকে একা পেয়ে ধরে ২৫ নম্বর সেকশনে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দুই ছেলেসহ আরও দুইজনকে নিয়ে দা দিয়ে উপর্যুপরি কুপা কুপি করেন এতে সে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করে।
পরে থাকে চা-বাগান সেকশনে ফেলে রাখলে এলাকাবাসী লাশটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। এদিকে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছিয়ে লাশের সুরতহাল তৈরি করে থানায় আনে। ময়না তদন্তের জন্য আজ সকালে মরদেহ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে হবিগঞ্জের নোয়াপাড়া তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে কমলগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, এএসআই আনিছুর রহমানের ও এএসআই হমিদুর রহমান নেতৃত্বে, হত্যকারীদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালালে আসামিরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাদেরকে ধাওয়া করে নিহতের দুই চাচাত ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। এবিষয়ে তারা জানায় যে, এ হত্যাকাণ্ডে তাদের সাথে একই এলাকার মিলন ও সুজন জড়িত ছিল। এ সময় তারা দা ও কুড়াল ব্যবহার করেছে। সুমন চা-বাগান থেকে বাঁশ নিয়ে ফেরার পথে তাকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ারদৌস হাসান বলেন যে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এই দুই পরিবারের মাঝে দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ চলছিল। দুই আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রধান আসামিসহ ওপর দুইজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।