কমলগঞ্জে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে ফিরতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল যুবক
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি।।
মাহে রমজান শেষে আসলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা।
উপজেলার টিলাঘেরা সবুজ চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে যেন পা ফেলার ঠাঁই নেই।
এদিকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকিট কাউন্টার থেকে জানা যায়, ঈদের দিন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে এক লাখ পনেরো হাজার টাকার মতো। এছাড়া আজ বুধবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রায় দের লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। এখানে প্রাপ্ত বয়স্ক, ছাত্র ছাত্রী সব ধরনের পর্যটক ছিল, তবে বিদেশি কোনো লোক নেই বললেই চলে। অন্যদিকে দেখা যায় কমলগঞ্জ থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্ত ইয়াদৌস হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত পর্যটক নগরী কমলগঞ্জে প্রতিটি স্পটে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য তাদের দেখা যায়।
আজ বুধবার (৪ঠা মে) দুপুরে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবপুর দেখা মিলে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটনপ্রেমী ভ্রমণ পিয়াসুদের। এদের মধ্যে সপরিবারে ও কাপলদের ঘুরতে আসা পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। ঈদের দিন মঙ্গলবারের চেয়ে ও বুধবার লোকজনের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও পর্যটকরা ছুটে এসেছেন জীব বৈচিত্র্যের অপরূপ সমাহার ঘুড়ে দেখতে।
কমলগঞ্জের মাধবপুর চা বাগান ও পদ্মছড়া নয়নাভিরাম মনোরম দৃশ্য পাহাড়ি টিলার ওপর সবুজ চা বাগানের সমারোহ, জাতীয় ফুল দূর্লভ বেগুনী শাপলার আধিপত্য, ঝলমল স্বচ্ছ পানি, ছায়া নিবিড় পরিবেশ, শাপলা শালুকের উপস্থিতি আনন্দের বাড়তি মাত্রা যুক্ত করেছে। মাধবপুর লেকে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। এছাড়াও ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, শমসেরনগর বাগীছড়া লেক, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধসহ কমলগঞ্জের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল সেইরকম। এদিকে হামহাম জলপ্রপাতে পর্যটকদের ভিড় কিছুটা কম ছিল।
সিলেট সরকারি কলেজের ছাত্রী রিনাও মদন মহন কলেজের ছাত্র /ছাত্রীরা জানান যে, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ার বন একটি সমৃদ্ধ বন। প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য আর জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এই বনটি যে কেউ দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে।
মাধবপুর লেকে ও লাউয়াছড়া ঘুরতে আসা ঢাকা ইডেন কলেজে ছত্র/ ছাত্রীদের সাথে কথা বললে তারা জানান যে, এখানে এসে আমার খুবই ভালো লাগছে। বন্ধুরা মিলে একৃ সাথে ঘুরতে এসেছি। বানরের লাফালাফি দেখেছি। বড় একটা ব্যাঙের ছাতা দেখেছি। একসাথে এত গাছ এর আগে কখনো আমি দেখিনি। তাছাড়া হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ যাদুঘর ও লেকের পানি কি বলবো সব মিলিয়ে অসাধারণ লাগছে। মন চাচ্ছে না যেতে। যেকোনো ছুটি পেলে আবার আসবো।
লাউয়াছড়া কাউন্টারে টিকেট বিক্রেতা আব্দুল মজিদ জানান যে, ‘ঈদের ছুটিতে লাউয়াছড়াসহ সব পর্যটনকেন্দ্রে প্রচুর পর্যটকের আগমন হয়। ঈদের দিন বৃষ্টি থাকলেও পর্যটকের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো ছিল। কিন্তু ঈদের পরের ৭দিন পর্যন্ত এখানে পর্যটক বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।’
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ারদৌস হাসান বলেন যে, আমি সকাল থেকেই কমলগঞ্জের সকল পর্যটক এরিয়া আমাদের থানা পুলিশের একটি টিমকে নিয়ে ঘুরে দেখছি। ঈদ আসলেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকের ঢল নামে কমলগঞ্জে। পর্যটকরা যাতে স্বাচ্ছন্দে ঘুরতে পারে সেজন্য আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য পর্যবেক্ষণ করছি। তিনি আরও বলেন যে, সকলের নিরাপত্তার জন্য কমলগঞ্জ থানা পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত আছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ।