এমএ হাই কমলগঞ্জ প্রতিনিধি::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নে টিসিবি (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) এর আওতায় বিতরণ করা চাল দূর্গন্ধযুক্ত, কালচে রঙের ও খাওয়ার অনুপযোগী—এমন অভিযোগ করেছেন উপকারভোগীরা।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল ১১ টায় ইউনিয়নের ৩৫২ জন কার্ডধারী উপকারভোগীর (এর মধ্যে ২২ জনের কার্ড বাতিল) মধ্যে চাল, ডাল, চিনি ও তেল বিতরণ করেন প্রশাসন কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলার ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. আকবর হোসেন। উপকারভোগীরা জানান, টাকা দিয়ে পণ্য নেওয়ার পর তারা দেখতে পান চালের রং কালচে, তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত এবং খাওয়ার অযোগ্য।
এক নারী উপকারভোগী বলেন, “এমন চাল পশুকেও খাওয়ানো যায় না, মানুষকে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।”
অন্য এক প্রবীণ উপকারভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকার আমাদের সহায়তা দিচ্ছে, কিন্তু স্থানীয়ভাবে নিম্নমানের চাল সরবরাহ করে প্রতারণা করা হচ্ছে।”
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে খাদ্য গুদাম থেকে নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হচ্ছে এবং এর সঙ্গে দুর্নীতির যোগসাজশ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, গত বছরও একইভাবে কমলগঞ্জ সদর আজিজুর রহমান ও শমসেরনগর খাদ্য গুদামের ইসমাম ইবনে খতিব এই দুই কর্মকর্তার গোপন যোগসাজশে স্থানীয় মিলার কানু দেবের কাছ থেকে নিম্নমানের ১৪ শত টন চাল গ্রহণ করা হয়েছিল, তবে রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
টিসিবির ডিলার মো. আকবর আলী বলেন, “আমাকে চাল সরবরাহ করেছেন জনবান্ধব খাতের ডিলার আবু আহমেদ। আমি যে চাল পেয়েছি, সেটিই জনগণের মধ্যে বিক্রি করেছি।”
জনবান্ধব খাতের ডিলার আবু আহমেদ বলেন, “শমসেরনগর খাদ্য গুদাম থেকে যে চাল পেয়েছি, সেটিই আকবর আলীকে দিয়েছি। চাল ভালো না খারাপ তা আমাদের দেখার সুযোগ নেই।”
শমসেরনগর খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা ইসমাম ইবনে খতিব স্বীকার করেন, “গুদামের কিছু চাল খারাপমানের ছিল, হয়তো কয়েক বস্তা ভুলবশত চালানে গেছে।”
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা রুমি দেব জানান, “অভিযোগ পেয়েছি। গত বছরের কিছু চাল গুদামে ছিল, সেগুলো হয়তো চালানে গেছে। ব্যবহার অনুপযোগী চাল ফেরত এনে ভালো চাল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, “চালের মান খারাপের অভিযোগ পেয়েছি। গত বছরও একই ঘটনা ঘটেছিল। বিষয়টি খাদ্য কর্মকর্তাকে জানিয়েছি, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”