কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের অলিগলি ঘুরলে যে কারও মানতে কষ্ট হবে এটি একটি ইউনিয়ন। সড়কসহ অলিগলির অনেক রাস্তার করুণ দশার কারণে ইউনিয়নবাসীর দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বর্ষা এলেই এ চিত্র আরও প্রকট হয়। গ্রামীণ কাঁচা রাস্তার বেহাল দশার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। রাস্তাগুলোতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বালিগাঁও গ্রামের এমন পরিস্থিতি। এমনকি বিকল্প সড়কেরও অবস্থা করুণ। এসব রাস্তার দীর্ঘদিন সংস্কার নেই, খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হলে শেষ হওয়ার নাম নেই। বিষয়টি বারবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও টনক নড়ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সরেজমিনে উপজেলার ৫নং কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বালিগাঁও গ্রামের রেললাইন এর রহিম মিয়ার থেকে জামালের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কিলোমিটার সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি পরিণত হয় জলাশয়ে। রাস্তার দুপাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার ফলে প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মজীবী মানুষ সবাই পড়ছেন চরম দুর্ভোগে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো খানাখন্দ, গর্ত ও কর্দমাক্ত হয়ে যায়। একটু বৃষ্টিতেই কাদা হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ে চলাচলকারীদের। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়েন বিড়ম্বনায়। বড় বড় গর্ত আর রাস্তায় পানি জমে থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই পথচারীদের। কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বড় গর্ত। কোথাও আবার বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি। বহুদিন ধরে সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা ফারদিন রশীদ খোকন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি। পুরো বর্ষায় কাদামাটি মাড়িয়ে চলাচল করা খুব কষ্টের। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলে রাস্তা পানির নিচে ডুবে থাকে। পানি সরে গেলে রাস্তা কাদা হয়ে যায়। ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যেতে কষ্ট হয়। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয় কোলে করে। রাস্তার বিষয়ে অনেকবার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে আবেদন দিয়েছি। কিন্তু আজও কোনো কাজ হয়নি।’
কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনা বেগম বলেন, ‘এলাকার মানুষকে নিয়ে আমি নিজেও বিপাকে আছি। বর্ষায় রাস্তাটি একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি, আশা করছি শিগগিরই এই রাস্তার উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। ’
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) প্লাবন পাল জানান, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে। বরাদ্দ এলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কমলগঞ্জ উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী (চাঃদাঃ)মো.আব্দুর রকিব বলেন, গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের জন্য আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে রাস্তা পাকা করা হবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘এলাকার জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’